Pages

জুলিয়ান বিভার এবং রাস্তায় আঁকা কিছু অসাধারণ "ত্রিমাত্রিক" ছবি





ব্রিটিশ চিত্রশিল্পী "জুলিয়ান বিভার" সবচেয়ে বেশি পরিচিত তার আঁকা অসাধারণ ত্রিমাত্রিক ছবির জন্য। এই কাজে দক্ষতার জন্য তাকে "পেইভমেণ্ট পিকাসো" বলা হয়। চলুন তার করা অসাধারণ কিছু কাজ দেখে আসি।








































ইতিহাসে ঘটে যাওয়া কিছু বিস্ময়কর সমাপতন !


১. আব্রাহাম লিঙ্কন এবং জন এফ কেনেডি।
--যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন এবং জন এফ কেনেডি। উভয়েই কংগ্রেস কর্তৃক প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। আব্রাহাম লিঙ্কন নির্বাচিত হয়েছিলেন ১৮৪৬ সালে এবং জন এফ কেনেডি ১৯৪৬ সালে ।
---উভয় প্রেসিডেন্ট সাধারণ জনগনের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন এবং দুজনেই আততায়ীর হাতে নিহত হন এবং উভয়েরই মৃত্যুর দিনটি ছিল শুক্রবার ।
---হোয়াইট হাউসে থাকা কালীন সময়ে উভয় প্রেসিডেন্টের স্ত্রী যার যার একটি করে সন্তান হারান ।
----উভয় প্রেসিডেন্ট এর ঘাতকদের জন্মস্থান ছিল যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিনাঞ্চল এলাকায়। লিঙ্কনের ঘাতক জন (John Wilkes Booth) এবং কেনেডির ঘাতক লি (Lee Harvey Oswald) দুজনের নামের অক্ষরের সমষ্টি ১৫।

---লিঙ্কন এবং কেনেডির মৃত্যুর পর যে দুজন ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট পদে স্থলাভিষিক্ত হন তাদের উভয়ের পারিবারিক নাম ছিল জনসন। অন্দ্রেউ জনসন যিনি লিঙ্কনের স্থলে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তার জন্মসাল ছিল ১৮০৮ এবং কেনেডির স্থলে লিন্ডন বি জনসন, তার জন্মসাল ছিল ১৯০৮।


২.টিটান এবং টাইটানিক
যুক্তরাষ্ট্রের উপন্যাসিক মরগ্যান রবার্টসন এর ১৮৯৮ সালে লেখা ভ্যানিটি উপন্যাসটি পড়ে সেদিন কেউ কল্পনা করতে পারেনি তার গল্পের রাজকীয় "টিটান" ছিল ১৪ বছর পর ডুবে যাওয়া বিলাসবহুল টাইটানিক জাহাজের প্রতিচ্ছবি। টাইটানিক জাহাজের চাকচিক্য, অভ্যন্তরের সুদৃশ্য জিনিস ইত্যাদি হুবহু মিল ছিল তার গল্পের "টিটান" জাহাজটিতে। গল্পের টিটান এবং বাস্তবের টাইটানিক উভয় জাহাজকে এপ্রিল মাসের মধ্যরাতে উত্তর আটলান্টিকের গভীর সমুদ্রে দুর্যোগের সমুক্ষিন হতে হয়। গল্পকার টিটান জাহাজটিতে যাত্রী ও ক্রেউ সংখ্যা, লাইফ বোট, মাল বহন করার ক্ষমতা এবং জাহাজের আকার এমনভাবে চিত্রায়িত করেছিলেন যেটা বাস্তবে টাইটানিক জাহাজে উপস্থিত ছিল। রবার্টসনের টিটান জাহাজটিতে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ছিল ৩০০০ হাজার এবং ২৪টি লাইফ বোট পক্ষান্তরে বাস্তবের টাইটানিক জাহাজের যাত্রী ধারণক্ষমতা ছিল ২২০৭ জন এবং ২০টি জীবনরক্ষাকারী বোট। গল্পের জাহাজটির ওজন ছিল ৭৫ হাজার টন আর টাইটানিক এর ওজন ছিল ৬৬ হাজার টন। কল্পনার জাহাজটি দৈর্ঘ্যে ছিল ২৪৩ মিটার যা কিনা টাইটানিকের দৈর্ঘ্যের কাছাকাছি ২৬৮ মিটার। টিটান এবং টাইটানিকের গতিবেগ ছিল যথাক্রমে ২৫ নট এবং ২৩ নট। টিটান এবং টাইটানিক দুটি জাহাজই ভাসমান বিশাল বরফখন্ডের সাথে ধাক্কা লেগে সমূদ্রের অতল গহ্বরে হারিয়ে যাওয়া, এ যেন সবই একই সূত্রে গাঁথা।


৩. টুইন টাওয়ার নিয়ে গণিতিক সমাপতন
---নিউ ইয়র্ক শহরের অক্ষর সমষ্টি ১১ এবং আফগানিস্তানের অক্ষর সমষ্টি ১১ ।
---ইউসুফ রামসী {Ramzi Yousef (১৯৯৩ সালে টুইন টাওয়ার হামলার পরিকল্পনাকারী)} এবং বুশ (George W Bush) এর নামের অক্ষর সমষ্টি ১১।
---টুইন টাওয়ারে প্রথম যে বিমানটি আঘাত হানে সেই ফ্লাইট এর নম্বর ছিল ১১ ,
এবং ফ্লাইট নং ১১ তে মোট যাত্রী ছিল ৯২ জন , ৯ +২ = ১১ ।
---দ্বিতীয় টাওয়ারে আঘাতকারী ফ্লাইট নং ৭৭ এর যাত্রীসংখ্যা ছিল ৬৫জন , ৬+৫ = ১১।
---বিয়োগান্তর নাটকটি ঘটে ১১ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ ৯ / ১১ , ৯ +১+১ = ১১।
---১১ সেপ্টেম্বর ক্যালেন্ডারের ২৫৪ তম দিন, ২ + ৫+ ৪ = ১১।



৪. দুই ভাইয়ের সর্বনাশা নিয়তি ।
---১৯৭৫ সালে বার্মুদায় একটি সড়ক দুর্ঘটনায় এক মটর সাইকেল চালক টেক্সির নিচে পৃষ্ঠ হয়ে মারা যায়। দুর্ঘটনাটি ঘটার ঠিক এক বছর পর নিহত ব্যক্তির ভাই একই মটর সাইকেলে যে রাস্তায় তার ভাই নিহত হয়েছিল সেই রাস্তা দিয়ে যাবার কালে তার ভাইয়ের হত্যাকারী সেই টেক্সী চালকের হাতে অনুরূপভাবে নিজেও প্রাণ হারায়।


৫. ইতিহাসের সবচেয়ে ধীর গতির বুলেট ।
ঘটনাটি ছিল ১৮৯৩ সালে। হেনরি জাইগল্যান্ড নামের আমেরিকার টেক্সাসের কাঠুরি তার বাগদত্তাকে প্রত্যাক্ষান করলে মেয়েটি অভিমানে আত্মহত্যা করে। বোনের অকাল মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে মেয়েটির ভাই হেনরির বাসস্থানে উপস্থিত হয় এবং বাড়ির সংলগ্ন বাগানে হেনরিকে দেখামাত্রই তাকে লক্ষ করে গুলি চালায়। আক্রমনকারী পরক্ষণে মানুষ খুন করেছে ভেবে তার ভিতরে অনুতাপ, অনুশোচনা সৃষ্টি হলে সে নিজের দেহে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করে।
কিন্তু সেদিন সেই দুর্ঘটনার হাত থেকে হেনরি সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়। গুলি তার চোয়াল ভেদ করে পাশ্ববর্তী একটি গাছে বিদ্ধ হয়। যাহোক ঘটনার ২০ বছর পর অর্থাৎ ১৯১৩ সালে হেনরি নতুন করে বাগানের কা শুরু করার উদ্দেশ্যে সেই গুলিবিদ্ধ গাছটি ডিনামাইট দিয়ে উৎপাটন করার সির্ধান্ত নেয়। যথারীতি সে ডিনামাইট এর সাহায্যে প্রচন্ড বিস্ফোরণ ঘটায়, কিন্তু বিধিবাম বিস্ফোরণটি গাছে বিদ্ধ থাকা গুলির চালকযন্ত্ৰ হিসাবে কাজ করে এবং গুলিটি সচল হয়ে সরাসরি হেনরির মাথায় বিদ্ধ হয়। ঘটনাস্থলে প্রাণ হারায় হেনরি।


৬.মেজর সামারফোর্ড এবং তার অনুসরনকারী ঘাতক বজ্রবিদ্যুত।
এক ব্রিটিশ মেজর নাম সামারফোর্ড। ১৯১৮ সালে ফ্লান্দেরস নামক একটি যুদ্ধের ময়দানে সামারফোর্ড বজ্রপাতে আক্রান্ত হলে তার দেহের নিম্নাংশ থেকে কোমর পর্যন্ত অবশ হয়ে যায়। এরপর পঙ্গুত্বের কারণে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হলে তিনি স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য কানাডার ভান্কুবের চলে যান। ১৯২৪ সালের কোনো একদিনে সামারফোর্ড একটি গাছে চড়ে বরশি দিয়ে মাছ ধরার সময় আচমকা গাছটির উপর বজ্রপাত হয়। এবারও বজ্রাঘাতে বেচারা সামারফোর্ডএর শরীরের ডানপার্শ্ব অবশ হয়ে যায়। অবশেষে দুই বছর ভোগার পর সামারফোর্ড ধীরে ধীরে আরোগ্য লাভ করেন এবং পার্কে পায়চারী করার মত শারীরিক শক্তি ফিরে পান। এরপর ১৯৩০ সালের গ্রীস্মকালে পার্কে পায়চারী করার সময় আবারও তার উপর বজ্র আঘাত হানে এবং এবার তিনি স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে যান। দুই বছর পঙ্গুত্ব নিয়ে বেঁচে থাকার পর অবশেষে সামারফোর্ড মারা যান। কিন্তু এখানেই সব শেষ নয়, সামারফোর্ড এর মৃত্যুর ৪ বছর পর এক ঝড়ের রাতে একটি সমাধিক্ষেত্রের সমাধিপ্রস্তর বজ্রপাতের আঘাতে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। কে শুয়ে ছিলেন ছিলেন সেই সমাধিত? সে অন্য কেউ নয়, মেজর নাম সামারফোর্ড।



৭ .হেথ লেডগার এবং ব্রানডন লী।
--- লেড্গার ও লী দুজনই ছিলেন সুদর্শন যুবক এবং চিত্র জগতে সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব । দুজনেই ২৮ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন ।
---লেড্গারের বাল্যকালে পিতামাতার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে যা লী বেলায়ও হয়েছিল।
--- লেড্গারের মা ছিলেন পেশায় অধ্যাপক, লী এর মা ও ছিলেন তাই।
--- লেড্গারের পিতা ছিলেন দক্ষ গাড়ীচালক এবং ক্রীড়াবিদ এবং সিনেমার প্রতি তিনি ছিলেন আবেগতাড়িত। ব্রান্দনের পিতা ব্রুসলী ছিলেন চলচ্চিত্রের অভিনেতা এবং ক্রীড়াবিদ এবং গাড়ীর প্রতি ছিল তার প্রবল আকর্ষণ।
---লেড্গার যুবক বয়সেই বন্দুক ও বন্দুক চালনার প্রতি আকৃষ্ট হন এবং অতিরিক্ত মাত্রায় মাদক সেবন করার কারণে মৃত্যুবরণ করেন। লীও যুবক বয়সে মাদকের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং মাথায় গুলির আঘাতে মৃত্যুবরণ করেন।
---উভয় অভিনেতা নিজেকে অসাধারণভাবে তুলে ধরার জন্য চোখে রং মাখিয়ে কাজল কালো চোখ বানাতেন আর মুখমন্ডলে নিতেন সাদা মেকআপ এবং উভয়েরই মুখে লেগে থাকত মৃদু হাসি। লীর ছিল অমায়িক হাসি আর লেড্গারের হাসি ছিল রহস্যপূর্ণ


৮.মি.জোসেফ এবংদুদফা অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া শিশু।
১৯৩০ সালের ঘটনা। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়ট শহরের অধিবাসী জোসেফ ফিগলোক এক খামখেয়ালী ও অমনোযোগী মায়ের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি হয়ে উঠেছিলেন। একদিন একটি বাড়ীর দোতলার জানলা দিয়ে একটি শিশু নিচে পরে যায়। ঠিক সেই সময় মি. জোসেফ ঐ বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছিলেন এবং বাচ্চাটি তার শরীরের উপর পরে। তবে সৌভাগ্যক্রমে সে যাত্রায় উভয়ই অক্ষত অবস্থায় রক্ষা পায়। দুর্ঘটনার ১ বছর পর ঐ শিশুটি একই ভাবে একই জানলা দিয়ে দ্বিতীয়বার নিচে পরে যায়। অবাক কান্ড এই যে , সেদিনও মি. জোসেফে সেই বাড়ির সামনে দিয়ে হেটে যাচ্ছিলেন এবং শিশুটি আবারও তার গায়ের উপর পরে এবং উভয়ই অক্ষত অবস্থায় রক্ষা পায়।



৯. নেপোলিয়ন এবং হিটলার ।
---নেপোলিয়ানের সিংহাসনে আহরণের সময়কাল ছিল ১৮০৪ সাল, অন্যদিকে হিটলারের চ্যান্সলর পদে আসীন হওয়ার সময়কাল ছিল ১৯৩৩ সাল। সময়কালের পার্থক্যঃ ১২৯ বছর ।
---নেপোলিয়ন ভিয়েনায় পদার্পণ করেন ১৮০৯ সালে পক্ষান্তরে হিটলার ভিয়েনায় পা রাখেন ১৯৩৮ সালে। সময়কালের পার্থক্যঃ ১২৯ বছর।
-- নেপোলিয়ন রাশিয়ায় প্রবেশ করেন ১৮১২ সালে অপরদিকে হিটলার ১৯৪১ সালে। সময়কালের পার্থক্যঃ ১২৯ বছর।
যে অভিন্ন কারণে বিশিষ্ট দুই ব্যক্তির জীবনে একের পর এক ব্যর্থতা এবং ব্যর্থতা থেকে শেষ পর্যন্ত পতন ডেকে এনেছিলঃ বিপুল বিস্তার এবং শীতকাল।


১০. সমাপতনঃ রাজা এবং প্রজা ।
ইতালির মনজার রাজা ছিলেন উমবের্তো I একদিন রাজা তার সহকারী এবং দেহরক্ষীকে নিয়ে এক রেস্তোরায় উপস্থিত হন। রেস্তোরার মালিক খাবারের ফরমাস নেয়ার জন্য টেবিলের সামনে এসে দাড়ালে রাজা লক্ষ করে দেখেন তার এবং রেস্তোরার মালিকের চেহারা , তাদের দুজনের দেহের গঠন , মুখমন্ডল হুবহু একরকম যেমনটি যমজদের বেলায় হয়ে থাকে। উৎসুক রাজা রেস্তোরার মালিকের পরিচয় জানতে আগ্রহী হলে উভয়ের মধ্যে আলাপ আলোচনা , কথোপকথন শুরু হয়ে যায় এবং কথা শেষে যে সকল আশ্চর্যজনক সমাপতন বেরিয়ে আসেঃ
---- উভয়ের জন্ম একই দিনে এবং একই সালে হয়েছিল। ( ১৪ মার্চ ১৮৪৪ সাল )
----উভয়ের জন্মস্থান ছিল একই গ্রামে।
----উভয়ের সহধর্মিনীর নাম ছিল মার্গারিটা।
--- যে দিনটিতে রাজার অভিষেক অর্থাৎ সিংহাসনে আহরণ করেছিলেন সেই দিনে মালিক রেস্তোরাটি উদ্বোধন করেছিলেন।
২৯ শে জুলাই ১৯০০ সালে রাজা একটি জনাকীর্ণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকালে আততায়ীর গুলিতে রেস্তোরার মালিকের মৃত্যুর সংবাদটি জানতে পারেন। রেস্তোরার মালিকের মৃত্যুসংবাদটি রাজাকে ব্যথিত করে । যখনই রাজা তার সমবেদনা প্রকাশ করে যাবেন সেই মহুর্তে এক বিদ্রোহী রাজাকে লক্ষ করে গুলি ছুড়ে। আর তাতেই ঘটনাস্থলে জীবনের প্রদীপ নিভে যায় রাজার।


ইতিহাসের পাতায় লেখা কিছু অস্বাভাবিক মৃত্যু




এস্কিলোঃ গ্রীক নাট্যকার
ওরাকলের করা ভবিষ্যদ্বাণীতে এস্কিলো যখন জানতে পারলেন ইমারতের নিচে চাপা পড়ে তার মৃত্যু হবে, তখন থেকেই দুর্ঘটনা এড়াতে তিনি শহরের বাহিরে বসবাস শুরু করলেন। কিন্তু বিধিবাম একদিন এক বাজপাখি শিকারকৃত একটি কচ্ছপ শুন্য থেকে ফেলে দিলে সেটি এস্কিলোর মাথার উপর পড়ে এবং সেই আঘাতেই তার জীবনাবসান ঘটে।


ফ্রেডেরিখ বারবারোসাঃ জার্মান সম্রাট( ১১২২-১১৯০)
পবিত্রভুমি জেরুজালেম জয় করার উদ্দেশ্যে সৈন্যসামান্ত নিয়ে ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হয়ে দীর্ঘসময় মরুভূমিতে পথ চলার পর প্রচন্ড তৃষ্ণার্ত অবস্থায় এক সময় সালেফ নদীর তীরে উপস্থিত হন সম্রাট ফ্রেডেরিখ। নদীর টলমলে পানি দেখে তেষ্টা নিবারণ এবং স্নান করার জন্য ঘোড়া থেকে নেমে মহুর্ত্তে ঝাপিয়ে পড়েন স্রোতস্বীনি নদীর বুকে এবং ভুলে যান তার পরিধানের লৌহবর্মের কথা। ফলশ্রুতিতে তার সলিলসমাধির বিনিময়ে গুনতে হয় নিজের ভুলের মাশুল।


দ্বাদশ জন পোপঃ
৯৬৪ সালে পোপ দ্বাদশ জনকে এক রমনীর শয়ন কক্ষে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেলে তার রহস্যাবৃত মৃত্যুকে ঘীরে ধুম্রজ্বালের সৃষ্টি হয়। কোনো মহল সেই রমনীর স্বামীকেই পোপের ঘাতক বলে দাবি করে আবার কেউ কেউ মনে করেন রমনীর সাথে সহবাস করার সময় পোপ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান


ক্রীস্টেইন চুবুকঃ সাংবাদিক ও সংবাদপাঠিকা।
১৯৭৪ সালের ১৫ জুলাই ক্রীস্টেইন চুবুক স্থানীয় টেলিভিশনের একটি লাইভ অনুষ্ঠান পরিচালনা করার সময় আত্মহত্যা করেন। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার ৮ মিনিট পর আচমকা একটি রিভলবার বের করে তিনি নিজের মাথায় গুলি চালান।


এ্যাটিলাঃ হান্সদের নেতা
বিয়ের বাসর রাতে অত্যাধিক মদ পান করায় তার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয় এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে এক সময় তার শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে যায় এবং পরদিন সকালে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।



জিম ফিক্সঃ লেখক
১৯৭৭ সালে তার লেখা The Complete Book of Running" বইটি সবচেয়ে বেশি কপি বিক্রি হওয়ায় সে বছরের সর্বোত্তম বিক্রেতা হিসেবে তিনি গৌরব অর্জন করেন। পরিমিত খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যায়াম অনুশীলন মধ্যেই যে দীর্ঘজীবন লাভ যায় সেটাই তিনি তার বইতে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন । তিনি তার লেখায় বলতে চেয়েছেন, খাদ্যসংযম অভ্যাস করা এবং ব্যায়াম অনুশীলন দীর্ঘজীবন লাভ করার চাবিকাঠি। একদিন এই লেখক যোগিং করার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঘটনাস্থলে মৃতুবরণ করেন।


গ্রীগোরী রাসপুতিনঃ রাশিয়ান সন্যাসী ।
১৯১৬ সালে রাশিয়ার এই প্রভাবশালী সন্যাসীকে বরফের নিচে পানিতে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় । যদিও পানিতে ডুবে তার মৃত্যুকে একটি নিছক দুর্ঘটনা বলে অপপ্রচার করা হয় কিন্তু তার মৃত্যু যে একটি পরিকল্পিত হত্যা সেটি পরবর্তিতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হয়। রাসপুতিন এর দেহ নদীতে জমাট বরফ কেটে গর্ত করে পানিতে নামানোর আগে তার শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হয়, এরপর তাকে পুরুষত্বহীন অর্থাৎ খাসি করানো হয় । তাছাড়া তার মাথায়, ফুসফুস ও কলিজাতেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।


স্যার ফ্রান্সিস ব্যাকনঃ ব্রিটিশ দার্শনিক এবং রাজনীতিবিদ ।
শীতে মৃতদেহ পচনে দেরী হয় এই সত্যটি পরীক্ষা করা জন্য একদিন প্রচন্ড তুষারপাত উপেক্ষা করে তিনি ঘরের বাহির হন এবং একটি মুরগি বধ করে সেটি মাটিতে পুতে রাখেন।এরপর তিনি ঘরে ফিরে আসেন ঠিকই কিন্তু নিজের অজান্তে শরীরে বহন করে নিয়ে আসেন মরণঘাতী রোগ নিউমেনিয়া। এর অল্প কিছুদিন পর তিনি শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন।



ফ্রাঁসোয়া ভাটেলঃ ফ্রান্স রাজা চতুর্দশ লুই এর বাবুর্চি ।
ঘটনাটি ঘটে ১৬৭১ সালে । যদিও প্রসিদ্ধ বাবুর্চি ফ্রাঁসোয়া ভাটেল সময়মত তার রন্ধনশালায় সামুদ্রিক মাছ সরবরাহ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন কিন্তু সরবরাহ আসতে অনেক দেরী হওয়ায় এবং নৈশভোজ বিলম্বে হবার কথা ভেবে অভিমানে ও লজ্জ্বায় ফ্রাঁসোয়া ভাটেল আত্মহত্যা করেন।


আলান পিন্কারটনঃ যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা ও গুপ্তচর।
যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা গোয়েন্দা আলান পিন্কারটন ফুটপাতে দিয়ে হাটার সময় পিছলে পরে গেলে তার জিভে কামড় লাগে এবং পরবর্তিতে তার জিহ্বার সেই ক্ষতস্থানে গ্যানগ্রীন হয়ে যায়। অবশেষে গ্যানগ্রীন রোগের কারণেই ১৮৮৪ সালে আলান মৃতুবরণ করেন।


জেরোমে লারভিংরোডেলঃ যুক্তরাষ্ট্রের বাস্তুসংস্থান আন্দোলনের উদ্যোগতা।
জেরোমে লারভিং রোডেল একটি সাক্ষাৎকারে ১০০ বছর বাঁচার প্রত্যয় ব্যক্ত করার কিছুদিন পরই ৭৩ বছর বয়সে মারা যান।



Blogger Widgets